এক নজর

15/recent/ticker-posts

Advertisement

শুরুতে যা জানা প্রয়োজন


Ayan Ruqyah House



 
আসসালামু আলাইকুম,

আমার চিকিৎসা পদ্ধতি “রুকিয়াহ শারিয়াহ” এই দেশে খুব একটা সুপরিচিত নয় তাই চিকিৎসা শুরু করার আগে আমার কাজের সুবিধার্থে আপনার কিছু কথা জানা প্রয়োজন। 

বাংলাদেশে অগনিত মাহাত কবিরাজ রয়েছে তাদের মধ্যে আবার কিছু কিছু প্রতারকও রয়েছে। যারা গ্যারান্টি দিয়ে সমস্যার সমাধান বা চিকিৎসা করে থাকেন। এই ধরনের মাহাত বা কবিরাজ যে কোন ধর্মের হয়ে থাকে। ব্যাপক প্রশারের কারনে তাদের চিকিৎসা পদ্ধতি সম্পর্কে প্রায় ছোট বড় সকলেই জানেন। এই সকল মাহাত বা কবিরাজ যে সকল নিয়ম বা পদ্ধতিতে কাজ করে থাকে আমরা মুসলিম হিসেবে কখনো যাচাই করিনা যে এগুলো ইসলাম সমর্থন করে কিনা। 

একজন মুসলিম হিসেবে আমার ঈমানী দ্বায়ীত্ব হলো সর্বাবস্থায় আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস রাখা। এই বিশ্বাসের মধ্যে একটি বিষয় হলো আমাকে অসুস্থ করেছেন আল্লাহ এবং সুস্থও করবেন আল্লাহ। সব রকম সমস্যা বা রোগের চিকিৎসা আল্লাহ দিয়ে রেখেছেন এই সকল সমস্যার সমাধান কোরআন এবং হাদিস থেকে আমরা পেয়ে থাকি। আমরা কোরআন, হাদিসের আলো থেকে যত দুরে চলে গেছি, আমাদের জীবনে অন্ধকারের পরিধি ততবেশি বৃদ্ধি পাওয়ায় শয়তান আমাদের জীবনকে প্রভাবিত করার সুযোগ পেয়েছে। 

এই সুযোগ গ্রহনকারির মধ্যে একটি দল হলো মানুষরুপী শয়তানের। এরা আমাকে দেখা মাত্র আমাদের সমস্যার কথা বলে দেয় বা আমার অতীতের গোপন কথা বলে দেয় আর আমরা মনে করি সে বড় মাপের কোন আলেম। অথচো এরা শয়তান জিনদের সাথে বন্ধুত্য করে বিভিন্নভাবে আমাদেরকে প্রতারিত করছে। একজন মুসলিমের সবচাইতে বড় সম্পদ হলো তার ঈমান যা সুকৌশলে তারা চুরি করছে। এই মাহাত বা কবিরাজেরা তাদের বন্ধু শয়তানকে খুশি করার জন্যই, অদ্ভুদ সব উপকরন আনতে বলে। যেমন:  শনি বা মঙ্গলবার ছাড়া কাজ হবেনা। লাল/কালো ছাগল,মুরগি,সাত মসজিদ/ মন্দির/ মাজারের মাটি,পানি,জুতার ধুলা,আপনার ব্যাবহৃত কাপড়,শরীরের মাপের সুতা,এরকম অনেক কিছু। আমরা যেগুলো যোগার করতে পারিনা মাহাত বা কবিরাজকেই দায়িত্ব্য দিয়ে বলি আপনি করেন যা খরচ হয় আমি দিব। 

এই সব উপকরনের মধ্যেতো কোন সমস্যা দুর করার ক্ষমতা নেই প্রশ্ন হলো তারা এগুলো কেন নেয় বা কি করে । যেমন: কেউ কালো মোরগ চাইল। তাহলে বুঝতে হবে তার বন্ধু জিন কালো মোরগ পছন্দ করে। আপনি বা আমি শুধু টাকা বা মোরগ দিচ্ছি কিন্তু এই মাহাত সেই মোরগকে তার বন্ধু জিনের নামে হত্যা করে তাকে খুশি করে বিনিময় সেই জিন আপনার কাজ করে দেয়। এতে আমি বা আপনি নিজের অজান্তেই নিজের ঈমানকে নষ্ট করে ফেলছি। আমরা আল্লাহর কাছে সাহায্য না চেয়ে সেই শয়তান জিনের কাছে সাহায্য চাইলাম, তাকে মাহতেরে মাধ্যমে পুজাদিয়ে খুশি করলাম আর আল্লাহকে নারাজ এর ফলে আমাদের জীবনে শয়তানের প্রভাব আরো বেড়ে যায়। এজন্যই বেশির ভাগ ক্ষেত্রে সাময়িক সুস্থতা লাভ করলেও কিছুদিন পরে আবার সমস্যা দেখা দেয় কখনো বা আগের চাইতে সমস্যা অনেক বেশি বেড়ে যায় তখন আবার সেই মাহাত বা তার চেয়ে বড় মাপের কারো কাছে যাওয়া ছাড়া উপায় থাকেনা। 

রুকিয়া পদ্ধতি সাধারণভাবে ব্যাপক পরিচিত না হওয়ায় সংক্ষিপ্ত বিবরণ পেশ করছি। রুকিয়াহ হলো সুন্নাহ ভিত্তিক, শরিয়ত সম্মত চিকিৎসা পদ্ধতি। একজন রুকিয়াহকারি অদৃশ্য জিন শয়তানের বিরুদ্ধে লড়াই করে আল্লাহর সাহায্য নিয়ে তার নিজের কোনই ক্ষমতা থাকেনা। এই পদ্ধতিতে কোন জিনের সাহায্য নেয়া হয়না। সাহায্য চাওয়া হয় আল্লাহর কাছে। আপনাকে দেখেই আপনার অতীত বর্তমান ভবিষ্যত বা আপনার সমস্যার কথা বলতে পারিনা। আমরা বলতে পারিনা কে আপনার উপরে যাদু করছে, কিভাবে করছে কেন করছে। আমরা বিশ্বাস করি গায়েবের খবর একমাত্র আল্লাহই জানেন যা ঈমানের অংশ।

আমরা প্রথমে রোগীর সমস্যা শুনি, প্রশ্ন করি সমস্যার অনুপাতে অনুমান করা হয় কি হয়েছে তার উপর কোরআনের কোন আয়াত পরা হবে তা নির্নয় করি। তার পর নিশ্চিত করার জন্য কোরআন তেলাওয়াত করি উচ্চ স্বরে যেন সবাই বুঝতে পারে। শুধু আউযু বিল্লাহিমিনাস শাইত্বনির রজিম, বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম উচ্চ আওয়াজে উচ্চারন করে বাকি সব বির বির করে মন্ত্র পড়িনা। কোরআন তেলাওয়াত শোনার ফলে জ্বীন-যাদু গ্রস্থ হলে রোগীর মধ্যে কিছু লক্ষন প্রকাশ পায় যার মাধ্যমে রুকিয়াহকারি বুঝতে পারেন তার কি ধরনের সমস্যা হতে পারে এবং এর পরবর্তি চিকিৎসা কি হবে। 

এই জন্য এই চিকিৎসায় সময় প্রয়োজন হয়। রুকিয়াহ কারিগন কখনই নিদৃষ্ট সময় বলতে পারেননা যে আপনি ৭ দিন বা ৩০ দিনের মধ্যেই সুস্থ হয়ে উঠবেন এটা আল্লাহর উপর নির্ভর করে তাই আমরা বলতে পারিনা। আমরা বলি আমি মাধ্যম মাত্র, সুস্থতা আল্লাহর কাছে আল্লাহ চাইলে সুস্থ হবেন, না চাইলে আমার মাধ্যমে সুস্থ হবেন না। রুকিয়াহ কারির প্রেশকিপশনের মধ্যে কোন তাবিজ বা অদ্ভুদ রকম কাজ থাকেনা। আমরা প্রেশকিপশনে দিয়ে থাকি কোরআন ও সহিহ হাদিস থেকে প্রাপ্ত ইসলাম সমর্থিত দোয়া, জিকির এবং আমল যা আপনাকেই করতে হবে।

আপনি যদি মনে করেন আমি কিছু করতে পারবোনা যা করার আপনি করবেন, আপনার পারিশ্রমিক দিয়ে দিবো। তাহলে রুকিয়াহ আপনার জন্য নয় আপনি কোন মাহাত বা কবিরাজ বা হুজুরের কাছে যান যারা জ্বীন দিয়ে তদবির করে থাকে। 

তাদের সাথে আমাদের কাজের পার্থক্য:

আমরা আল্লাহর কাছে সাহায্য চাই, তারা চায় জ্বীন বা মাজারের পীরের কাছে। 

আমরা পাঁচ ওয়াক্ত সালাত আদায়ে উৎসাহিত করি তারা চায় শয়তান খুশি হবে এমন কাজ করাতে।  

আমরা আল্লাহর রহমতের দিকে মানুষকে ডাকি, তারা চায় আমাদের কাছে আসুন আপনাকে কিছু করতে হবেনা এই তাবিজ নিয়ে যান, সব ঠিক করে দিবে। 

আমরা বলি আপনার ঈমানকে হেফাজত করে চিকিৎসা করুন ঈমান কে নষ্ট করে নয় তারা বলে আমার ঈমান ঠিকই আছে, ডাক্তারের কাছে গেলে কি ঈমান নষ্ট হয় এটাওতো তেমনি। 

আমরা বলি আল্লাহ সুস্থ করবেন বা সমাধান করবেন তারা বলে আমি সুস্থ করতে বা সমাধান করতে পারবো। 

আমরা বলি কে যাদু করছে জানিনা এটা আল্লাহ ভালো জানে তারা বলে ওমুক ওমুক জন এই জন্য যাদু করছে। 

এখন সিদ্ধান্ত আপনার: নিজের ঈমানকে রক্ষা করার উদ্দেশ্যে নিয়ে, আল্লাহর উপর আস্থা রেখে ধৈর্য্য ধরার মানসিকতা থাকলে আপনি রুকিয়াহ করাতে পারেন।


 

----------------------------------------
আমি আগ্রহী হয়ে সাক্ষর করলাম