আমরা প্রতিদিন নিজেরাই নিজের উপর যাদু করি। শুনে অবাক হচ্ছেন..? অবাক হবার কিছুই নেই বিস্তারিত বলছি ধৈর্য ধরে পড়–ন আশা করি উপকারে লাগবে।
যারা স্কুল-কলেজ-ভার্সিটিতে পড়ছে তার ৯৮% ছাত্র বা ছাত্রি ধর্মিও জ্ঞান শুন্য হয়ে বড় হচ্ছে। তাই এদের মধ্যে নামাজ আদায়ের প্রবনতা নেই বললেই চলে। আমি নিজেই দেখেছি, সামনে পরীক্ষা তাই বাবা মা রোজা থাকতে দেয়না পরীক্ষা খারাপ হবে। আহ--- কতবড় স্পর্ধা স্রষ্টার হুকুমকে কতো ছোট করেই দেখা হচ্ছে কারন মাত্র পরীক্ষা, তাহলে সেই সন্তান কি আর নামাজ রোজার গুরুত্ব্য বুঝবে..? নিশ্চই নয়।
আরেকটি কারন হলো দাজ্জালের শিক্ষা ব্যাবস্থা। এই শিক্ষা ব্যাবস্থার উদ্দেশ্যই হচ্ছে ছোট থেকেই গোলামি করার মানসিকতা তৈরি করা। নিজের টাকায় সময় ব্যায় করে কোন ব্যাংকে চাকুরী নিতে পারলেই সাকসেস। থাকো সেখানে ৯টা থেকে ১০ টার চার দেয়ালের খাঁচায়।
পঞ্চম শ্রেনী থেকে ইসলাম শিক্ষা উঠে গেছে। তাহলে ক্লাস সিক্স থেকে অনার্স মাস্টার্স পিএইচডি পর্যন্ত বাকি ২০-২৫ বছর কোন প্রকার ধর্মশিক্ষার ব্যাবস্থা রাখা হয়নি। স্বভাবতই মানুষ ভুলে যায় তাই পঞ্চম শ্রেনীর ধর্ম শিক্ষা আপনার জীবনে কোনরুপ প্রভাব ফেলতে পারেনা।
পরিস্কার থাকতে হলে গোসল করতে হয় না করলে শরীরে আপনা থেকেই ময়লা জমে, নখ ছোট রাখতে কাটতে হয় নইলে বড় হতেই থাকে এটা প্রকৃতির বানানো নিয়ম। এই নিয়ম আমরা চাইলেই পরিবর্তন করতে পারিনা।
রাসূল (সাঃ) বলছেনে, ‘সাত বছর বয়স হলে তোমরা তোমাদরে সন্তানদরে নামাজরে জন্য নর্দিশে দাও। বয়স ১০ বছর হলে (নামাজ না পড়ল) তাদের প্রহার করো এবং তাদের বিছানা পৃথক করে দাও।
এখন আসি মুল প্রসঙ্গে। আমি দেখেছি ৩৫-৪৫ বছর বয়স তব্ওু তারা নামাজ আদায় করেনা ২২-৩০ বছরতো এখন মামুলি ব্যাপার।
হিসেবের সুবিধার জন্য ধরে নিলাম ছেলে মেয়ের জন্য ১০ বছর ধরে নিলাম। যে ছেলে বা মেয়ে ৩০ বছর বয়স পর্যন্ত নামাজ পড়েনি তাহলে ১০ বছর বাদ দিলে বাকি থাকে ২০ বছর। এই বিশ বছরে দিনের সংখ্যা হয় ৭৩০০ দিন। প্রতিদিন শয়তান গিরা দেয় ৩ টি তাহলে ২০ বছরে গিরার সংখ্যা হয় ৭৩০০ গুনন ৩ = ২১৯০০ টি।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলছেনে: “তোমাদের কেউ যখন ঘুমিয়ে যায় শয়তান তখন তার মাথার কাছে বসে তিনটি গিরা লাগায়। প্রতটিি গরিা দযে়ার সময় একটি কথা বলে যে তোমার সামনে আছে র্দীঘ রাত, তুমি ঘুমাও। যখন সে নিদ্রা থেকে উঠে আল্লাহর জিকির করে তখন একটি গিরা খুলে যায়। এরপর যখন সে অজু করে তখন আরকেটি গিরা খুলে যায়। এরপর যখন নামাজ পড়ে তখন শষে গিরাটি খুলে যায়। ফলে সে সারাদিন র্কমতৎপর ও সুন্দর মন নিয়ে দিন কাটায়। আর যদি এমন না করে তাহলে সারাদিন তার কাটে খারাপ মন ও অলসভাব নিয়ে I
যার শরীরে ২১৯০০ টি গিরা লাগানো আছে, (একুরেটলি হিসেব করলে এর চাইতে বেশি হবে) যেগুলি খোলার কোন ব্যাবস্থা করা হয়নি আপনার কি ধারনা এগুলি জীবনে প্রভাব ফেলছেনা..?
প্রথমেই এর প্রভাব পড়ে মনের মধ্যে। শয়তানের চক্রান্ত খুবই সুক্ষ্য তবে দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব ফেলে। এটাও তেমনি।
আল্লাহ তাআলা বলেছেন: আর যে পরম করুণাময়ের জিকির থেকে বিমুখ থাকে আমি তার জন্য এক শয়তানকে নিয়োজিত করি, ফলে সে হয়ে যায় তার সঙ্গী। [সূরা যুখরুফ : ৩৬]
তাহলে যারা নামাজ পড়ছেনা তারা শয়তানের দ্বারা প্রভাবিত হবার দড়জা উন্মুক্ত করছে I যা আমরা কোরআন ও হাদিস থেকেই প্রমান পেলাম।
আমার অভিজ্ঞতা থেকে বলছি। শতকরা ৯০% মানুষের জ্বীন-যাদুর কোন সমস্যাই থাকেনা যেটা থাকে সেটা তার ধারনা মাত্র এবং নিজের কর্মের প্রভাব। আবার আজ পর্যন্ত এমন কেউ কি আছে যে কোন মাহাত- কবিরাজ-ওঝার নিকট গেছে অথচ সেই মাহাত বা কবিরাজ বলেছে আপনার কোন সমস্যা নেই আমি নিশ্চিত একজনোও এমন খুঁজে পাওয়া যাবেনা। তাদের কাছে গেলেই শুনতে হবে হ্যাঁ আপনার উপর ওমুক ওমুক করা হয়েছে।
আমারা নিজেদের দিকে তাকাই না, আমার কোন সমস্যা হলেই ধরে নিতে হবে আমাকে কেউ কিছু করছে। তার পর শুরু হয় কে করছে। এই যে আপনি কুয়ায় পড়লেন এই কুয়া থেকে উঠার পথ আর থাকেনা। এর কাছে ওর কাছে গিয়ে অর্থ-সময়-সম্মান সর্বপরি ঈমানো হারাতে হচ্ছে। তবুও আমাদের জ্ঞান ফিরে না।
আমি বিসমিল্লাহ বলে ঘরে প্রবেশ করিনা, বিসমিল্লাহ বলে ঘরে প্রবেশ না করলে শয়তান আমার সাথে ঘরে প্রবেশ করে।
আমি বিসমিল্লাহ বলে খাওয়া শুরু করিনা, বিসমিল্লাহ না বললে আমার সাথে শয়তানো খাবার খায়।
আমি টয়লেটে দোয়া পড়ে প্রবেশ করিনা, দোয়া না পড়ে প্রবেশ করলে শয়তান আমার যৌনাঙ্গ নিয়ে খেলা করে বদনজর দেয়।
আমি সকাল ১০ টার সময় ঘুম থেকে উঠি, অথচো ফজরে না উঠলে শয়তান আমার কানে প্রসাব করে দেয় যার জন্য চেহারার মধ্যে ফোলা ফোলা ভাব থাকে, তিনটা গিরা তো থাকেই, আবার ৭০ হাত লম্বা রশি আমার শরীরে বেঁধে দেয় যার জন্যে আমার শরীর ভারি বোধ হয়।
আমি দাড়িয়ে দাড়িয়ে বাম হাতে চা, পানি পান করবো অথচ বাম হাতে শয়তান খেয়ে থাকে।
আমি প্রতিদিন গান শুনবো অথচ এই গান হারাম যা আমার কারিনকে শক্তিশালী করবে।
আমি খোলা চুলে দুপুর সন্ধায় বাইরে বের হবো আমি অসুস্থ হবনা, যেখানে এই সময় শয়তান বাইরে বের হয় তখন কোন মেয়েকে বা ছোট বাচ্চাকে পছন্দ হলে আক্রমন করে।
আমি সারা জীবন আল্লাহর কথা শুনলাম না তাহলে কিভাবে আশা করি আমার সন্তান আমার কথা শুনবে..?
বসের কথা মতো না চললে বসকে খুশি না করতে পারলে আমার চাকরি থাকবে না, অথচ মুখে বলি রিজিকের মালিক আল্লাহ তাহলে আমার চাকরিতে বরকত হবে কেমন করে..?
এরকম হাজারো ছোট ছোট কারন রয়েছে যা আমাদের জীবন মনে প্রভাব ফেলে। আমরা জানিনা বলেই গুরুত্ব্য দিতে বা মানতে পারিনা।
এই নোংড়া গুলো এতো দির্ঘ সময় ধরে প্রতিদিন জমতে জমতে তার পর না আপনি অসুস্থ হন। প্রথমে মানসিক ভাবে তার পর তা গড়ায় শরীরের দিকে । ডায়বেটিক, ক্যান্সার, খুধা মন্দা, হতাশা, মানসিক অসান্তি এগুলো আপনার নিজের দোষেই আপনার জীবনে এসেছে। বিজ্ঞান কি বলছে সেটা নিয়ে যুক্তি তর্ক করতে আসিনি যে বিজ্ঞান আল্লাহকেই মানে না তাকে নিয়ে আমার মাথা ব্যাথা নেই।
হাদিস বলে যখন ব্যাভিচার বেড়ে যায় তখন ভুমিকম্প হয় আর বিজ্ঞান বলে প্লেট সরে যাওয়ার জন্য ভুমিকম্প হয়। দুটোই সঠিক তবে আপনার সাথে আমার পার্থক্য হলো আপনি আগে বিজ্ঞানকে মানেন আমি আগে কোরআন হাদিসকে। কারন আগে বিজ্ঞানকে মানলে মানতে হবে বানর থেকেই ক্রমান্নয়ে মানুষের প্রবর্তন হয়েছে। তাহলে তো কোরআন মিথ্যা ( নাউজুবিল্লাহ) যেখানে আল্লাহ নিজ হাতে আদম আলাইহে ওয়া সাল্লামকে সৃষ্টি করেছিলেন।
আমি যখন কোন রোগীকে বলছি আপনার কোন কিছু হয়নি। আপনি নামাজ শুরু করেন আর এই দোয়াগুলো পড়েন ইনশাআল্লাহ সব ঠিক হয়ে যাবে। পেছন থেকে শুনতে হয় এই ব্যাটা কিছুই জানেনা তিনটা টা মাহাতের কাছে গেলাম, এত্তো টাকা খরচ করলাম তিন জনই একই কথা বললো আমার শাশুড়ি যাদু করছে। আর এ বলে কিছুই হয়নি। আসলে এখানে আপনার শাশুড়ি যাদু করেনি আপনি ধারনা করছেন যেটা সেটাই আপনি শুনতে পেয়েছেন সেই মাহাতের কাছ থেকে।
যারা জ্বীন দিয়ে তদবির করে তারা আপনাকে দেখে বলে দিতে পারে এই কারনে যে আপনার কারিন জীনের সাথে সে কথা বলে নেয় আপনার ইতিহাস সেই প্রেক্ষিতেই সেটা বলে তাই মিলে যায় এতে অবাক হবার কিছুই নেই অথচ আমাদের দেশের মানুষ এটাকে মহা-পান্ডিত্যের বিষয় মনে করে যা শরিয়তে অনুমোদন নেই। এটা শয়তানের কাজ। আমি ভাই রুকিয়াহ করি। আপনার মন জয় করার জন্য মিথ্যা বলতে পারবো না কারন আমরা সকলেই জানি মিথ্যা বলা কবিরা গোনাহ শুধু শুধু জেনে শুনে গোনাহ অর্জন করতে বসিনি। যারা করছে তাদের বিষয় আমি কোন মন্তব্য করবোনা এটার ফায়সালা আল্লাহ করবেন। আল্লাহ চাইলে তাদেরকে ক্ষমাও করতে পারেন। আল্লাহ যতুটুকু জ্ঞান আমাকে দিয়েছেন আল্লাহ চাইলে তাতে কারো উপকার হবে নইলে হবেনা।
আবার আমি যদি বুঝতে পারি কি হয়েছে তাহলে রোগীকে বলিনা কি হয়েছে আমি সমাধান দিয়ে দেই। কারন যাদু আর বদনজর এটা বললেই বেশি হয়। রোগী মানসিক ভাবে ভেঙ্গে পড়ে আবার যদি তার লক্ষনের সাথে অন্যকারো লক্ষন মিলে যায় সে তখন না বুঝেই বলে দেয় ও.. ও.. আপনাকে তো যাদু করা হয়েছে। অথচো এমনো হতে পারে সে বদনজর বা মানসিক কারনে অসুস্থ। এই যে একটু ছোট্ট কথার মাধ্যমে সেই ব্যাক্তির জীবনে অনেক বড় সমস্যা তৈরি করলেন আপনি। সে যাবে কোন মাহাতের কাছে তারপর যা হয়ে থাকে তাই হবে।
খুবই সংক্ষিপ্তভাবে বিষয়টি তুলে ধরার চেষ্টা করলাম। বিস্তারিত বললে অনেকেই পড়তে চায়না বলে কিনা এতো বড় পোষ্ট.. পড়বোনা। আল্লাহ আমাদের সকলকে দাজ্জালের এই চক্রান্তকে বোঝার ও এর থেকে বেচে থাকার সামর্থ দান করুন।